নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফতুল্লায় পাড়া মহল্লায় সক্রিয় একাধিক কিশোর গ্যাং, আতংক

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০০:৪৪, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফতুল্লায় পাড়া মহল্লায় সক্রিয় একাধিক কিশোর গ্যাং, আতংক

অল্প বয়সী কিশোর ও সদ্য কৈশর পেরোনো উঠতি বয়সীরাই এখন ফতুল্লাবাসীর প্রধান আতংক। সামান্য কিছুতেই তারা জড়িয়ে পরছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। হত্যা করতে ও তারা সামান্য ভাবেনা।

 

এরা দলবেধে রাস্তার মোড়ে মোড়ে, অলি-গলিতে, চায়ের দোকানে বা খালি কোন মাঠ আড্ডা মারে। অধিকাংশরাই আবার নেশায় বুধ হয়ে থাকে। ফলে তারা যে কোন অপরাধ সহজেই জন্ম দিয়ে থাকে।


এরা চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক, ইভটিজিং,ধর্ষনসহ নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এমনকি খুনের মতো ঘটনার জন্ম দিতে ও কার্পন্য করেনা তার।

 

নিজেদের অবস্থান বা শক্তি বৃদ্ধিতে এ সকল কম বয়সী কিশোর ও সদ্য কৈশর পেরোনে উঠতি বয়সীদের তথাকথিত রাজনৈতিক বড় ভাইয়েরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।


মহলটির মতে, অসুস্থ রাজনীতির শিকারে পরিনত হচ্ছে কিশোর ও সদ্য কৈশর পেরোনো উঠতি বয়সী তরুনরা।


তথ্য  মতে, ফতুল্লার প্রতিটি এলাকায় দিনকে দিন বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে এ সকল অপরাধীরা। অল্প বয়সী কিশোর ও সদ্য কৈশর পেরুনো উঠতি বয়সী তরুনরা নিজেদের মেলে ধরতে রাজনৈতিক বড় ভাইদের আশ্রয়- প্রশয়ে এসে তাদের সাথে মিছিল-মিটিংয়ে গিয়ে তাদের আর্শীবাদপুস্ট হয়ে স্থানীয় মহলে জন্ম দিয়ে থাকে নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। 


এদের অধিকাংশরাই আবার ব্যবহার করে থাকে ক্ষুদ্র আকারের ধারালো অস্ত্র। কারো সাথে কথাকাটাকাটি বা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরা ক্ষুদ্রাকৃতির ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে রক্তাক্ত জখম সহ খুন করতেও দ্ধিধা করেনা। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় একটি বা একাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। 


তবে এ কিশোর গ্যাং বলে পরিচিত এ সকল গ্রুপে যে আবার সকলেই কিশোর বা ১৮ বছরের নিচে তা কিন্ত নয়।এ সকল গ্রুপে সদ্য কৈশর পেরুনো উঠতি বয়সী তরুনরাও রয়েছে।তারাই মূলত গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। আধিপত্য বা কোন বিষয়ে সংঘর্ষ হলে অন্য এলাকার বন্ধু গ্যাং সদস্যরা যোগ দেয়।


এরা অহেতুক  এলাকায় দল বেধে ঘোরাঘুরি, স্কুল- কলেজ ছুটির সময় বা গার্মেন্ট ছুটির এরা খুব ব্যস্ত হয়ে পরে। মোটর সাইকেলে করে শব্দ করে হর্ন বাজিয়ে পাড়া মহল্লার অলিগলিতে ছুটে বেড়ায়।


ফতুল্লা থানা এলাকার একাধিক তথ্য মতে,ফতুল্লা বাজার-ডি আইটি মাঠ ও লালপুর এলাকায় রয়েছে তানভীর-রমজান গ্রুপ,দাপা বালুর মাঠ এলাকায় আজমির গ্রপ।

 

এই বাহিনী মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কে মালবাহী ট্রাক থেকে চুরি করে থাকে বিভিন্ন পন্য সামগ্রী,রেল স্টেশন এলাকায় রয়েছে পিচ্চি জয় বাহিনী, শারজাহান রোলিং মিলস এলাকায় রনি ওরফে ডিব্বা রনির নেতৃত্বাধীন বাহিনী। 


এরা ছিনতাই, মাদক ব্যবসা সহ নানা অপরাধের জন্ম দিয়ে স্থানীয়বাসী কে জিম্মি করে রেখেছে। পাগলা নন্দলালপুর এলাকায় স্বাধীন বাহিনী, শাহিমহল্লা এলাকায় নাঈম বাহিনী, দাপা শৈলকুড়া এলাকায় ইফাত-ইমরান বাহিনী, শিয়াচর তক্কার মাঠ এলাকায় আসিফ-সিহাব গ্রুপ, জামতলায় সক্রিয় রয়েছে রায়হান গ্রুপ, চানমারিতে  বাবু বাহিনী, তল্লায় রয়েছে কসাই গ্যাং, বাবা গ্রুপ, গাল কাটা সাদ্দাম বাহিনী, লাদেন গ্যাং। ইসদাইরে ধোপা গ্যাং ও কমল বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। 


ইসদাইর সুগন্ধা আবাসিক এলাকায় ইভন বাহিনী দাপিয়ে বেড়ায়। ইবন বাহিনীর সদস্যরা সুগন্ধা মসজিদের পেছনে একটি খালি জায়গায় দেশীয় অস্ত্র পুঁতে রাখে বলে জানান স্থানীয়রা। বুড়ির দোকান আফরাফুল, রগ কাটা আকাশ, ফ্লেক্সী সাইফ গ্যাং ছিনতাই, মাদক বিক্রিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। 


উত্তর মাসদাইর গাবতলীতে আলিফ গ্যাং ও উৎস গ্যাং। দুই গ্যাংয়েই ২০ থেকে ২৫ সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে উৎস গ্যাংয়ের প্রধান উৎস দুইবার গ্রেপ্তার হলেও তাকে ছাড়িয়ে আনে তার বাবা। আফাজনগরে নাজমুল গ্যাং সক্রিয় রয়েছে।


শিবু র্মাকেটে মিশাইল রাকিব গ্যাং ও ব্লেড বাবুল গ্যাং দাবড়ে বেড়ায়। দক্ষিন সস্তাপুরের তোতলা দিপু আর পঞ্চিম সস্তাপুরের ওয়াইফাই সাগর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। কায়েমপুরে বুইট্টা বাবু, ইকবাল বাহিনীর সদস্যর এলাকায় মাদক বিক্রি, ইভটিজিংসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। 


স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সময়ের সবচাইতে বড় আতংকের নাম। তারা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করেনা।সামান্য কিছুতেই এরা ভয়ংকর রুপ ধারন করে খুন- খারাবির মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এদের পেছনে রয়েছে আবার প্রভাবশালী বড় ভাইদের আর্শীবাদ। ফলে টু শব্দটি পর্যন্ত কেউ করেনা।


জেলা পুলিশের দ্ধায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, কিশোর গ্যাং দমনে ইতিমধ্যেই প্রতিটি থানা এলাকায় তালিকা তৈরি হচ্ছে। খুব অচিরেই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে সূত্রটি জানায়।