অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দলসহ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় যে কোনো সময় ভেঙ্গে ফেলা হতে পারে মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির এমন গুঞ্জন চলছে সর্বত্র। ফলে কারা আসছেন আগামী কমিটিতে তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
দীর্ঘদিন ধরে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় এবং আহবায়ক কমিটির অনেকে পদত্যাগ করায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি চান।
এদিকে, মহানগর বিএনপির কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে যোগ্য ও পরীক্ষিতদের খোঁজা হচ্ছে। শীর্ষ পদ পেতে বসে নেই পদপ্রত্যাশীরাও। তারাও নানাভাবে লবিং করছেন।
নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদে আলোচনায় আছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, বর্তমান আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, মহানগর বিএনপির পদত্যাগী যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউসার আশা।
জানা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নবীন ও প্রবীনদের সমন্বয়ে মহানগরে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রাখা দলের প্রবীন ও তরুণ নেতাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। গত জুলাই মাস থেকেই দেশে তরুণদের একটি বিপ্লব চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় দলটি এবার মহানগর বিএনপিতেও তরুনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখতে চায় বলে জানা গেছে।
এদিকে, আলোচনায় থাকায় এড. আবুল কালাম দীর্ঘদিন অসুস্থতা জনিত কারণে সক্রিয় রাজনীতির বাইরে থাকলেও তার অনুসারী নেতাকর্মীরা সর্বদা রাজপথে ছিলো। তাছাড়া, বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে তিনিই বিএনপি থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বারবার মনোনয়ন পেয়েছেন।
সাখাওয়াত হোসেন খান ও টিপু রাজপথে সক্রিয় থাকলেও ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির অনেকেই তাদের এ নেতৃত্ব মেনে নিতে পারে নি। ফলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার যে বিষয়টি সেখানে কিছুটা পিছিয়ে ছিলো তারা। সাখাওয়াত-টিপু বিরোধীরা মহানগর বিএনপর পৃথক ব্যানারে দলীয় সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছিলো।
অপরদিকে, এড. তৈমুর বারবার বিতর্কিত হলেও তার আপন ছোট ভাই খোরশেদ বরাবরই জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করে গেছেন। বর্তমানে কোনো কমিটিতে না থাকলেও নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে ছিলেন রাজপথেই। উল্লেখিত ব্যক্তিদের মধ্যে মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি রয়েছে আলোচনার তুঙ্গে।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে দেওভোগের অন্য নেতারা যেখানে বিদেশে পালিয়ে বা ঘরের মধ্যে বসে ছিলো সেখানে মন্টিই দেওভোগে বিএনপিকে চাঙ্গা করে রেখেছিলো। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও করেছে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শীতল পরিবহনের ২৬টি বাস পোড়ানোর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দেয় শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত সহকারী।
ফলে রাজপথের এই নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা উচিত বলে মনে করে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এছাড়া, সাবেক এমপি পুত্র আবুল কাউসার আশাও রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদের আলোচনায়।