ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের উকিলপাড়া এলাকায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ময়মনসিংহের ভালুকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী দিপু চন্দ্র দাসকে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা দিপু দাসকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, হত্যার পর মৃতদেহকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমা তারা অতিক্রম করেছে। আমরা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসাথে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
বক্তারা দিপু চন্দ্র দাসের অসহায় স্ত্রী কন্যা এবং পরিবারকে ১০ কোটি টাকার এফডিআর সঞ্চয়পত্র করে দেওয়া দাবী জানান।
তারা আরো বলেন, ৫ আগষ্টের পর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা আমাদের পাশে থেকে নিরাপত্তা বিধান করেন অথচ এখন কারা এধরনের অপকর্ম করছে তা জাতি জানতে চায়।
ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদীসহ ৭১ এবং জুলাই বিল্পবের সকল শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আমরা সকল রাজনৈতিক দল এবং সাংবাদিকদেরকে আমাদের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
এসময় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে, এবং ছাত্র মহাজোটের নেতৃবৃন্দরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শংকর কুমার দে, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন।
উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে ময়মনসিংহের ভালুকায় কারখানার ভেতরে একদল শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা দিপুকে কারখানার বাইরে নিয়ে যায়।
সেখানে স্থানীয় লোকজনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা তার মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মরদেহ আংশিক পুড়ে যায়। পুলিশ পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।


































